ফেইসবুক কথাটি শুনেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না বললেই চলে।  আপনি যেহেতু  এই আর্টিকেল পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছেন তাহলে অবশ্যই আপনি একজন ফেইসবুক User. ফেইসবুক বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত একটি সোশ্যাল মিডিয়া। কিছু দিন আগে এক গবেষণায় দেখা যায় যে পুরো বিশ্বে প্রায় ৩.৯ বিলিয়ন মানুষ ফেইসবুক এর সাথে সক্রিয় ভাবে জড়িত।  এতে অবাক হওয়ার কিছুই নেই। 

কারণ ফেইসবুক যে একটি সোশ্যাল মিডিয়া তা কিন্তু নয়।  বর্তমানে অনেক ছোট ছোট বিজনেস ও ফেসবুকের মাধ্যমে চলছে। একসময়কার একটি সামান্য সোশ্যাল মিডিয়া কিভাবে আজকে এতটা সাকসেস ?  চলুন আজকে জেনে আসি ফেইসবুক এর ইতিহাস সম্পর্কে।

ফেইসবুক এর প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত অবস্থা তার তিন বন্ধু এডুয়ার্ডো স্যাভেরিন, ডাস্টিন মস্কোভিত্‌স এবং ক্রিস হিউজ কে সাথে নিয়ে ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ফেইসবুক প্রতিষ্ঠা করেন।   ২৮ অক্টোবর ২০০৩ এ তৈরি করেন ফেসবুকের পূর্বসূরি সাইট ফেসম্যাস।

এতে তিনি হার্ভার্ডের ৯ টি হাউস এর শিক্ষার্থীদের ছবি ব্যবহার করেন। তিনি দুইটি করে ছবি পাশাপাশি দেখান এবং হার্ভার্ডের সব শিক্ষার্থীদের ভোট দিতে বলেন। কোন ছবিটি হট আর কোনটি হট নয়। এমন কিছু আনএথিকাল ইস্যুস এর কারণে  কলেজের শিক্ষার্থীরা এই সাইটটি বন্ধ করতে  বাধ্য করে।

ফেসম্যাস হতে অনুপ্রাণিত হয়ে ২০০৪ এর জানুয়ারিতে মার্ক তার নতুন সাইট এর কোড লেখা শুরু করেন এবং ফেব্রুয়ারিতে হার্ভার্ডের ডরমিটরিতে দ্যফেসবুক.কম এর উদ্বোধন করেন। 

ফেইসবুক এর ইতিহাস

TheFacebook.Com তৈরী করার ২৪ ঘন্টার মধ্যে  মার্ক জাকারবার্গ ১২০০ জন স্টুডেন্ট এর রেজিস্ট্রেশন দেখতে পান। এবং ২ মাসের মধ্যে  TheFacebook.Com হার্ভাড ছাড়াও আরো কিছু কলেজে ফেইসবুক নামে জনপ্রিয়তা পায়।  সেই বছরই জুন মাসের মধ্যে ফেসবুকে প্রায় দেড় লক্ষ ইউজার তাদের প্রোফাইল তৈরী করেছিল। এবং বছর শেষে ফেসবুকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্বারা ১ মিলিয়ন এ।   ফেসবুকের এই সম্ভাবনা দেখে সে  বছরই পেপাল এর ফাউন্ডার ফেসবুকের ১০.২ % শেয়ার কিনে নেয় ৫ লক্ষ US ডলারে।

২০০৫ সালের আগস্টে ‘দ্য ফেসবুক ডটকম’ নাম পাল্টে কোম্পানির নাম রাখা হয় শুধু ‘ফেসবুক’ এবং ডিসেম্বরে ফেসবুকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা হয়ে দাঁড়ায় ৫৫ লাখ ।

২০০৬ সালে ফেইসবুক এবং মাইক্রোসফট একসাথে ফাসেবুককে এগিয়ে নেয়ার অঙ্গীকার বদ্ধ হয়। সে বছর ফেইসবুক তার ব্যবহারকারীর সর্বনিম্ন বয়স সীমা ১৩ করে দেয় যার ফলে ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে ফেসবুকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা হয়ে দাঁড়ায় এক কোটি ২০ লাখ ।

২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভার্চুয়াল গিফট শপ চালু হয়। এবং এপ্রিলে ফেসবুকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা পৌঁছায় দুই কোটিতে ।

২০০৮ সালে এসে ফেইসবুক আইনগত সমস্যাগুলোর সমাধান এ আসে।  এবং প্রায় ৫ বিলিয়ন এর কোম্পনিতে রূপান্তরিত হয়।

২০০৯ সালে আসে দেখা যায় ফেইসবুক myspace.com কে পেছনে ফেলে দেয় এবং myspace.com ফেইসবুক থেকে ইনকাম করা শুরু করে। 

ফেইসবুক এর ইতিহাস

তার পর থেকে ফেইসবুককে আর পিছন ফায়ার তাকাতে হয় নি।  এবং ধীরে ধীরে ফেসবুকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তবে এর মধ্যে ফেসবুকের কিছু সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছিল যার মধ্যে অন্যতম ছিল সরকার কর্তৃক বন্ধ হওয়া, ব্রিটিশ অফিসে কর্মীদের ফেসবুক ব্যবহারে বাধা, একাউন্ট হ্যাক এবং তথ্য চুরি। তবে ফেইসবুক এইসব সমস্যার মোকাবেলা করে সামনে এগিয়ে গিয়েছে। ধাপে ধাপে ব্যবহারকারীর সুবিধার জন্য ফেইসবুকে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন ফিসার্স এবং আপডেটস।  তার সাথে যুক্ত হয়েছে ফেসবুকের সহযোগী আরো কিছু সোশ্যাল মিডিয়া।  ২০২১ সালে মার্ক জাকারবার্গ তার মুল কোম্পানির নাম “ফেইসবুক” থেকে পরিবর্তন করে “মেটা” করে দেয়।

ফেইসবুক এখন শুধু একটি সোশ্যাল মিডিয়াই নয় বরং অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ের জন্য মার্কেটপ্লেস ও বটে। কারণ ফেসবুকের মার্কেটপ্লেসকে কেন্দ্র করে অনেক ব্যবসায়ি তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছে। 

আজকে এই পর্যন্তই। খুব শিগ্রই আমরা গুগল এর ইতিহাস নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হবো।  সে পর্যন্ত ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। 

আমাদের আর্টিকেল রিলেটেড ভিডিও গুলো দেখতে এখনই আমাদের YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন এবং ফেইসবুক পেজটি লাইক করুন।

Sharing Is Caring

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to Top